স্টাফ রিপোর্টার | মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০১৭ | পড়া হয়েছে 238 বার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আব্দুল কুদ্দুছ মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ ময়দানে ছয়জন মানুষকে ঘিওে ছোটখাটো জটলা। দলগতভাবে গান গাইছেন তারা। গান গাইতে গাইতে একজন বাজাচ্ছেন হারমোনিয়াম, অন্য একজন ঢোল, আর একজন করতাল। গান শুনে জড়ো হওয়া লোকজন তাদের টাকা দিচ্ছেন।
ছয় জনের দলটি প্রথমে গাইলেন ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’। একে একে গাইলেন আরো কয়েকটি গান। তাদের গানের সঙ্গে তালি দিচ্ছিলেন জড়ো হওয়া লোকজন। শুধু তালি নয়; গান চলাকালীন তারা ওই দলটিকে দিচ্ছিলেন টাকাও।
একপর্যায়ে থামলো গান। কথা বলার সুযোগ হলো ওই দলের অভিভাবক ও মূল গায়ক মো. হেলাল মিয়ার সঙ্গে। জানা যায়, দলের সবাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। একেবারে জন্ম থেকেই অন্ধ। দলের বাকি পাঁচ সদস্য হেলাল মিয়ারই ছেলেমেয়ে। তারা হলো, সাদেমিয়া, ফারুক, তারেক, বারেক ও খাইরুল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় গান করেন তারা। প্রায়ই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাইরেও যান। আর এভাবে গান গেয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন।
কথা হয় হেলাল মিয়ার সাথে। তিনি জানান, তার পরিবারে স্ত্রীসহ ১০ জন সদস্য আছে। থাকেন সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামে। জন্ম থেকেই তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তার পাঁচ ছেলেও জন্মান্ধ। অন্ধ হওয়ার কারণে একটা সময় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অকূল পাথারে পড়েছিলেন তিনি। এরপরই গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের খ্যতিমান আধ্যাত্মিক গানের শিল্পী ওস্তাদ শাহনূর শাহ্ এর কাছ থেকে তিনি তালিম নেন। এরপর আর গান ছাড়তে পারেননি। এক পর্যায়ে ছেলেমেয়েদেরও গান শেখান। শুধু গান নয়; ছেলেমেয়েদের হারমোনিয়াম, করতাল, তবলা, ঢোল বাজাতেও শেখান তিনি। এখন তার ছেলেমেয়েরা গান-বাজনায় পটু হয়ে উঠেছে।
সব ধরণের গানই তারা করেন। তবে আধ্যাত্মিক গান বেশি করেন। মাঝে মাঝে শ্রোতাদের অনুরোধে হিন্দি গানও করেন। এতে লোকজন মুগ্ধ হয়ে হাততালি দেয়। এটা তার খুব ভালো লাগে।
গান গেয়ে মানুষের মন জয় করে যা পান তা দিয়েই মূলত চলে হেলাল মিয়ার সংসার। সরকারের পক্ষ থেকেও কিছু টাকা পান তিনি, তবে তা যৎসামান্য।
কথায় কথায় তিনি জানান, ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি তাদের ফরিদপুর ডেকে নিয়ে যান হানিফ সংকেত। তার পর সেখানে তার পরিবার নিয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র জন্য একটি পর্ব রেকর্ড করা হয়, যা ২৯ জানুয়ারি প্রচার হয়। ওই সময় অনুষ্ঠানে হানিফ সংকেত তার হাতে দুই লাখ টাকার চেক তুলে দেন। সেই স্মৃতি এখনও তিনি ভুলতে পারেননি।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |