বাঞ্ছারামপুর প্রতিনিধি : | শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০১৬ | পড়া হয়েছে 759 বার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ইউপির চেয়ারম্যানের চরম অবজ্ঞা ও অবহেলার স্বীকার হলেন রাষ্ট্রীয় খেতাবপ্রাপ্ত যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান (৭৫) । ফরদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দুই মাস ঘুরেও নিজের ভাতা উত্তোলনের জন্য প্রত্যায়নপত্র পাননি। তাই আর্থিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান। চেয়ারম্যান অফিসে ধরনা দিয়েও প্রত্যায়নপত্র না পাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের চরলোহনিয়া গ্রামের ফাস্ট ইস্ট রেজিমেন্ট থেকে অবসর প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রাপ্ত বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান গত অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টার চট্টাগ্রাম থেকে একটি চিঠি আসে তিনি জীবিত আছেন এই মর্মে একটি প্রত্যায়নপত্র পাঠানোর জন্য। সেই সুবাদে বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে তার ছেলেকে পাঠান প্রত্যায়নপত্র আনতে। সচিব কাগজ রেখে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। এক মাস গড়িয়ে গেলেও মেলেনি প্রত্যাশিত প্রত্যায়নপত্র। অসুস্থ বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান একাধিকবার তার ছেলেকে পাঠিয়েছেন চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তারপরও চেয়ারম্যান দেননি প্রত্যায়নপত্র। বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান স্বশরীলে না আসলে প্রত্যায়নপত্র দিবেনা বলে চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন।
এবিষয়ে আব্দুস সোবহানের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৩) বলেন, “চেয়ারম্যান সাহেবকে আমি দুইবার ফোন দিয়ে বলেছি এবং তিনদিন তার অফিসে গিয়েছি তারপরও তিনি কেন আমার বাবার প্রত্যায়নপত্র দিচ্ছে না বুঝতে পারছি না।”
এব্যাপারে বীর প্রতীক আব্দুস সোবহান জানান, “আমার ছেলে আনোয়ার দুইদিন চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়েছে আবার তার অফিসেও গিয়েছিল কয়েকবার এবং আরও দুই-তিন দিন চেয়ারম্যানের সচিবকে ফোন দিয়েছিলাম কাগজটায় সাইন করিয়ে দেয়ার জন্য। এতোদিন হয়ে গেলেও চেয়ারম্যান ও সচিব কেউ এখনও পর্যন্ত প্রত্যায়নপত্র দেয়নি। দেশের জন্য যোদ্ধ করেছি শরীলে এখনও পাক-বাহিনীর গুলির জখম রয়েছে। রাষ্ট্র আমাকে বীর প্রতীক খেতাব দিয়েছে। কিন্তু আজ খুব কষ্ট হচ্ছে, স্বাধীন দেশে আমি অবহেলার পাত্র হলাম চেয়ারম্যানের কাছে।”
এবিষয়ে ফরদাবাদের ইউনিয়নের সচিব মো. বাবুল মিয়া বলেন, “বীর প্রতীক সাহেবের কাগজটা আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেছিলাম। চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন তিনি নিজেই সোবহান সাহেবের বাড়িতে গিয়ে দেখে প্রত্যায়নপত্র দিবেন।”
এবিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে কমান্ডার এইচ এম আব্দুল কাদের জানান, “একজন বীর প্রতীকের সাথে প্রত্যায়নপত্র নিয়ে এতদিন ধরে ঘুরানো এইটা সেলিম চেয়ারম্যানের এক ধরনের হয়রানি। বিষয়টি শুনে আমার কাছেও খারাপ লাগছে। চেয়ারম্যানকে এখনই বলবো আজ কালের মধ্যে যেন বীর প্রতীক সোবহান সাহেবকে প্রত্যায়নপত্রটা পৌছে দেয়।”
এদিকে ফরদাবাদ ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ হোসেন,“এইটা সম্পুর্ণ অন্যায়। একজন যোদ্ধাহত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সাথে এই ধরনের আচরণ মানা যায় না। চেয়ারম্যান চরম অন্যায় কাজ করেছেন।”
এবিষয়ে ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম বলেন, “আমি মুক্তিযোদ্ধা সোবহান সাহেবকে চিনি। তবে আমার কাছে প্রত্যয়নপত্রের জন্য কোন কাগজ সচিব দেয়নি। আমি বিষয়টা খোজ নিবো।”
এব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন,“বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বীর প্রতীক সোবহান সাহেব যেন প্রত্যায়নপত্র পায় সেই ব্যাপারে এখনই আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে ফোন দিয়ে বলবো।”
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |